সেই ছোটবেলায় পশ্চিম বাংলার আনন্দমেলায় পবিত্র সরকারের একটি লেখায় পড়েছিলাম। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক, যশোরের লোক, বাংলা পড়ায় এম এ ক্লাসে। একদিন পড়াচ্ছিল বিদ্যাপতি:
কুলিশ শত শত পাত মোদিত,
ময়ূর নাচত মাতিয়া;
মত্ত দাদুরী, ডাকে ডাহুকি—
ফাটি যাওত ছাতিয়া।
হঠাৎ এক ছাত্র জিজ্ঞেস করল, দাদুরী মানে কি? শিক্ষক বিরক্ত। এম এ ক্লাসের বাংলার ছাত্রের অর্থটি জানা থাকবার কথা। তবুও শিক্ষক উত্তর দিল, বেং। ছাত্রের দ্বিতীয় প্রশ্ন, বেং মানে কি? শিক্ষক রীতিমত হতবাক। তবুও উত্তর এল, ভ্যাক। ছাত্র বে-বাক।
বাংলায় এ এবং অ্যা এই দুই স্বরই লেখা হয় বেশিরভাগ সময় এ দিয়ে। অনেক আগের রীতি। অনেক সময় আবার নতুন কিছু করার চিন্তাভাবনাও হয়েছিল। তবে কোনওটিই টিকতে পারে নি। বাংলায় এ-কার দুটি, শুরুতে মাত্রা ছাড়া, যা বসে শব্দের শুরুতে, আর মাত্রা সহ যা বসে মাঝে এবং শেষে। বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রনাথের বইয়ে শব্দের শুরুতে মাত্রাসহ এ-কারের অর্থ উচ্চারণটি হবে অ্যা দিয়ে। ব্যাপারটি কেবল বিশ্বভারতীর রবিঠাকুরের বইয়েই থেকে যায়। যোগেশচন্দ্রবিদ্যানিধি, পবিত্র সরকার আর হালে পলাশ বরণ পাল সহ অনেকেই নতুন হরফের প্রচলনের চিন্তা করেছে। তাদের ব্যবহার আর হয়ে ওঠে নি। বাংলাদেশেও বিভিন্ন সময়ে নতুন হরফের কথা ভাবা হয়েছিল, কাজ হয়ে ওঠে নি। নিজের বাড়িতে বসে টাকা বানালে তা বাজারে চলে না।
No comments:
Post a Comment