Monday, November 26, 2007

উপভাষার জন্য হরফ

ইংরেজির পূর্ব অ্যাংলিয়ান উপভাষার একটা প্রধান বৈশিষ্ট্য হল য়-ধ্বনির লোপ (yod dropping)। এই উপভাষার আমেজ আনতে গিয়ে চার্লস ডিকেন্স তার ডেভিড কপারফিল্ড-এ ব্যবহার করেছে dootiful (দায়িত্বপূর্ণ)। নরফোকের একটি প্রসিদ্ধ পণ্যের বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা হত, হয়ত এখনও হয়, bootiful (সুন্দর)। বাংলায়ও একই রকম ভাবে উপভাষা লেখা হয়ে আসছে। কিন্তু এভাবে উপভাষার লেখন ভাষাতত্ত্বের কাজে আসছে না। সুইডিশ উপভাষা লেখার জন্য ১৯৭৮ সালে অধ্যাপক জে. এ. লান্ডেল (সুইডিশ উচ্চারণ নয়) একটি ধ্বনিতাত্ত্বিক বর্ণমালা তৈরি করেছিল, যদিও এর চল এখন গুটিকয়েক ভাষাতত্ত্ববিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তারপরেও তা দিয়ে উপভাষার অনেকটি লিপিবদ্ধ করা গেছে। মান্য বানান রীতিতে উপভাষা বা লোকভাষা লেখা সম্ভব নয়, কারণ এতে সংশয়ের অবকাশ থাকে। বাংলা একাডেমীর বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধানে প্রথাগত হরফ ব্যবহার করেই কয়েকটি নিয়মের কথা ভাবা হয়েছিল। অভিধানে সে সব ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু খুব একটা কাজের হয় নি।

অভিধানটিতে অঞ্চলভিত্তিক উচ্চারণের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে: এসব অঞ্চল ছাড়া সর্বত্র চন্দ্রবিন্দু রক্ষিত, এখানে আদিতে মহাপ্রাণতা রক্ষিত, ওখানে শব্দ অন্ত্য ব্যতীত সর্বত্র মহাপ্রাণতা রক্ষিত, এসব এলাকায় ড়-ধ্বনি র-এর মত, অন্য সব এলাকায় পার্থক্য রক্ষিত, ওখানে চ-বর্গের মূল ধ্বনি রক্ষিত, এখানে পরিবর্তিত এবং চ-এর জায়গায় চ‘, ছ-এর জায়গায় স, জ-এর জায়গায় য, এবং ঝ-এর জায়গায় ঝ‘, অনেক জায়গার জন্য দীর্ঘ স্বর, খণ্ড-ত, বিসর্গ, মুর্ধন্য ণ এবং ষ ব্যবহৃহ হয় নি, ইংরেজি -এর জায়গায় শ এবং -এর জায়গায়, ত-এর আগে, স ব্যবহৃত হয়েছে, ইংরেজি -ধ্বনির জন্য এ্যা (অ্যা হলে বোধ করি ভাল হত) ব্যবহৃত হয়েছে, অ-ধ্বনি অ দিয়ে এবং অ-নিহিত ও-ধ্বনি ও দিয়ে সংজ্ঞাপিত, যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি হস্‌ চিহ্ন দিয়ে ভেঙ্গে লেখা হয়েছে, দ্বৈতস্বর অই এবং অউ যথাক্রমে ঐ এবং ঔ দিয়ে লেখা হয়েছে। যদিও একগাদা নিয়ম মেনে অভিধানে শব্দের উচ্চারণ খোঁজার ঝক্কি থাকলেও, এত কিছুর পরও কিছু কিছু ব্যাপার স্পষ্ট নয়।

য দিয়ে ইংরেজি z-ধ্বনি নির্দেশের ব্যাপারটি সুবিধের নয়, যখন একই হরফ অন্য শব্দে ইংরেজির j-ধ্বনির দ্যোতক। জ-বিন্দু (জ়) দিয়ে ধ্বনিটি প্রকাশ করা উচিত। এরপরও দেখতে হবে উপভাষার লেখার ক্ষেত্রে ধ্বনিটি ঘৃষ্ট না উষ্ম‌। এবং এই পার্থক্য দেখানোর প্রয়োজন আছে কি না। সিলেটি বাংলায় ক হরফটির কখনও /q/, আরবি ق-এর মত। এবং কখনও বা /x/, আরবি خ-এর মত। জ্ঞানেন্দ্রমোহনের নিয়মে ক় এবং খ় লেখা উচিত। প এবং ফ প্রায়শই ফ়, যা ইংরেজির f-ধ্বনির মত। অনেক উপভাষায় এ-ধ্বনি এবং অ্যা-ধ্বনির মাঝে একটি ধ্বনি আছে যাকে বিবৃত এ-ধ্বনি বা সংবৃত অ্যা-ধ্বনি বলা যেতে পারে। এর দেখা মিলবে সিলেট অঞ্চলে কিংবা মেদিনীপুরের হলদিয়া অঞ্চলে। কেউ কেউ মনে করে এ-কারযুক্ত হরফের পর একটি ইলেক চিহ্ন দিয়ে উচ্চারণটি বোঝানো যেতে পারে: দেশ, দে’শ এবং দ্যাশ। অনেকে জিহ্বামূলীয় স্পর্শধ্বনিকেও ইলেক চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করতে চায়: আ’'তি (হাতি), যেমনটি কুমিল্লা বা সিলেটে শুনতে পাওয়া যায়। ব্যঞ্জনের দ্বিত্বে য-ফলার ব্যবহার না করাই ভাল। ওড়িয়ার মত কোন ক্ষেত্রে অন্ত্য বা আদ্য অ-এর অ-ধ্বনির (ও-ধ্বনি নয়) উচ্চারণ কিভাবে লেখা হবে? ওড়িয়ার 'তুম্ভর নাম কি' (ତୁମ୍ଭର ନୀମ କି? তোমার নাম কি?) 'তুম্ভর্অ নাম্অ কি?' হিসেবে লেখা যেতে পারে, নাহলে সমস্ত অন্ত্য-অ ও-ধ্বনি ও-কার দিয়ে লিখতে হবে। কারও কারও ধারণা লেখা উচিত ইলেক চিহ্ন দিয়ে: ক'র্‌ল' /kɔrlɔ/।

Friday, November 23, 2007

সিদ্‌র্‌ নামের ঘূর্ণিঝড়

গেল ১৫ই নবেম্বরের বিকেলে বাংলাদেশের পশ্চিম উপকূলে ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানা প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড়ের নাম সিড্‌র (হয়ত সিদ্র্‌ হলে ভাল হত, বা সিদ্‌র্‌, আরও ভাল; হিন্দিতে লেখা হচ্ছে भीषण चक्रवाती तूफान सिद्र, ভীষণ চক্রবাতী তূফান সিদ্র), যদিও বাংলায় উচ্চারিত হচ্ছে সিড্‌অর্‌, লেখাও হচ্ছে হসন্ত ছাড়া। যাই হোক। পরের দিন ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি বাংলা দৈনিক পত্রিকার প্রথম পাতায় একটি লেখার শিরনাম, সিডর অর্থ চোখ; সিংহলীতে, অর্থটি গর্তও হতে পারে। পরের দিন একটি ইংরেজি দৈনিকের একটি খবরে ছিল সিংহলী ভাষায় সিডর অর্থ গর্ত বা চোখ। ঘূর্ণিঝড়েরও একটি চোখ ছিল, বেশ বড়। এ থেকে ভ্রান্ত অনুমান হতে পারে। সিংহলীতে চোখকে বলা হয় অ্যাস (ඇස); আর গর্তকে সিদুর (සිදුර); দুটোই অ-কারান্ত উচ্চারণ। হয়ত বাংলা (নাকি সংস্কৃত) ছিদ্রের কোনও ভাবে জ্ঞাতি ভাই। সিংহলী একটি ইন্দীয় ভাষা। দেখে মনে হয় ভগ্ন সংস্কৃত শব্দের সঙ্খ্যা সিংহলীতে বিস্তর। বাংলায় এধরণের শব্দগুলো পালি বা প্রাকৃতের মাধ্যমে আগত, তদ্ভব। সিংহলীতে তৎসম শব্দ স্তুতি (ধন্যবাদ), হিম (বরফ), বয়স (বয়স), নব (নতুন, আধুনিক), আরম্ভ (শুরু) ইত্যাদি যেমন আছে, তেমনি দেখা পাওয়া যায় তদ্ভব শব্দের, মুণ (মুণ্ড?) মুখ অর্থে, মিহিরি (মিছরি?) মিষ্টি অর্থে, দোর (দ্বার > দুয়ার?) বাংলাও দোর, দরজা অর্থে, গঙ্গ (গঙ্গা?) নদী অর্থে, অ্যাঙ্গ (অঙ্গ?) শরীর অর্থে, বা রহস (রহস্য?) গোপন অর্থে, ইত্যাদি; সব শব্দই অ-কারান্ত।

বিশ্ব আবহাওয়া বিজ্ঞান সংস্থার উত্তর ভারত সাগরের ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের তালিকায় থাকা সিদ্‌র্‌ (السّدرة, আস্‌-সিদ্‌রা) শব্দটি আদতে ওমানের দেওয়া, এবং তা আরবি শব্দ। ওমানের দেওয়া তালিকায় আর সাতটি নামও আরবিতেই। ২০০৬-এর ২৮শে এপ্রিল মায়ানমারের আঘাত হানা ঝড়টির নাম ছিল মালা, শ্রীলঙ্কার দেওয়া নাম, সিংহলীতে, যদিও বাংলাতে শব্দটি একই, অর্থ সমেত। সিংহলীতে সিদ্‌র্‌-এর পরের পরের ঝড়টির নাম হতে পারে আবে। তবে মাঝের সম্ভাব্য ঝড়টির নাম হবে নার্গিস, পাকিস্তানের দেওয়া। বর্তমান তালিকায় আটটি দেশের দেওয়া ৬৪টি নাম আছে, সময়কাল মধ্য ২০০৪ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত।

আরবি আস-সিদ্‌রা বা আস-সিদ্‌র্‌ অর্থ সাধারণভাবে কুলগাছ যার বৈজ্ঞানিক নাম Ziziphus spina-christi। প্রাচীন গাছ। ইবনে সিনার বই আল-কানুন ফ়ি আল-তিব্ব্‌-এ ভেষজ গুণের জন্য গাছটির নাম পাওয়া যায়। আগে ওমানে সিদ্‌র্‌-এর পাতার চূর্ণ দিয়ে মাথার চুল পরিষ্কার করা হত।

Wednesday, November 14, 2007

বাংলায় গ্রিক শব্দ

ভারতবর্ষের সাথে গ্রিসের লেনদেন শুরু যিশু খ্রিস্টের জন্মের প্রায় ৩২৭ বছর আগে মহামতি আলেকজান্ডারের পাঞ্জাব আক্রমণের মধ্য দিয়ে, তক্ষশীলার অধিপতি রাজা অম্ভি দিগ্বিজয়ী সিকন্দারের কাছে আর্তসমর্পন করে সে সময়। পরে আলেকজান্ডারের সাথে মগধের রাজা পুরুর যুদ্ধ পরের বছর। আরও পরে সেলুকাসের আক্রমণ রাজা চন্দ্রগুপ্তের রাজ্য, যা বর্তমানে পাঞ্জাব নামে পরিচিত। সেলুকাসের দূত মেগাস্থিনিসের একটি বইও আছে এ বিষয়ে, ইন্দিকা নামে। তারও আগের গ্রিসে ভারতবর্ষ সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ পারস্যের রাজা কুরুর (Cyrus) মাধ্যমে, ৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মাঝামাঝি। এ অঞ্চলের ভাষায় তাই গ্রিক শব্দ থাকা স্বাভাবিক। এবং বাংলায় বর্মি শব্দের মত গ্রিক শব্দের সংখ্যাও খুবই অল্প, হালি দুয়েক। এর প্রায় সবই এসেছে সংস্কৃতের হাত ধরে। সুড়ঙ্গ, কেন্দ্র, হোরা, দাম, ময়দা, এবং জামিত্র। মনিয়ের মনিয়ের-উইলিয়ামস‌্-এর অভিধান মতে যবনিকা (যার জবনিকা বানানটিও শুদ্ধ, ইওনিয়া (Ἰόνια) > যবন (यवन) > যবনিকা, জবনিকা) ইত্যাদিও গ্রিক থেকে আগত। আরও দুয়েকটা শব্দ থাকতে পারে। সংস্কৃতে তো আছেই, বংশীয় শব্দের পাশাপাশি গ্রিক থেকে আগত অর্বাচীন শব্দ: যেমন, উষ্ট্র (বাংলায় উট) আর ক্রমেলক।

বাংলায় সুড়ঙ্গ বেশি প্রচলিত হলেও আসল বানান সুরঙ্গ। শব্দটি সংস্কৃততে सुरङ्ग (-ङ्गा), অর্থ, দেয়ালে বা মাটির নিচে খোঁড়া গর্ত। বাংলায় সিঁধ কাটা অর্থেও সুড়ঙ্গের ব্যবহার দেখতে পাওয়া যায়। প্রাচীন গ্রিকে σύριγξ (syringx, গুহা)। শব্দটি লাতিনে ঢুকেছে syrinx হিসেবে, অর্থ গুহাপথ, বা মাটির নিচে চলাচলের গর্ত। আধুনিকে গ্রিকে শব্দটি একটু অন্যভাবে আছে, σηραγξ (sēranx)। বাংলায় কেন্দ্র, সংস্কৃতের केन्द्र, বৃত্তের কেন্দ্র, আর গ্রিকে κέντρον (kentron, বৃত্তের মাঝের বিন্দু)। শব্দটি লাতিনে আছে centrum হিসেবে, কম্পাসের স্থির কাঁটা বা বৃত্তের মাঝবিন্দু অর্থে। হোরা, সংস্কৃতে होरा (ঘণ্টা, সময়), এবং গ্রিকে ὡρα (hōra, দিনের চব্বিশ ভাগের একভাগ সময়)। এই শব্দ দিয়েই বোধ করি ভারতবর্ষে চব্বিশ ঘণ্টার দিনের হিসেবের শুরু। আগে কালগণনা হত বিপল, পল, দণ্ড, প্রহর ইত্যাদি দিয়ে। দাম শব্দটি গ্রিক δραχμή (drakhmē, মুদ্রার নাম) থেকে আগত সংস্কৃত द्रम्य (দ্রম্য, দাম), তার প্রাকৃতের আধুনিক রূপ । দ্রাখ্‌মে > দ্রম্য > দম্ম > দাম। বনেদি সংস্কৃত শব্দ মূল্য সমানভাবে বিরাজমান। ময়দা শব্দটির পরিবর্তন ঘটেছে, সাথে পরিভ্রমণও। গ্রিক σεμίδαλις (semidalis, মিহি গমের আটা) থেকে সংস্কৃতে समीदा (সমীদা), সেখান থেকে প্রাকৃত মীদা এবং সম্ভবত মধ্য এশিয়া ভ্রমণের পর ফারসি ميده (ময়দা) হিসেবে বাংলায় আগমন। কারও কারও মতে জামিত্র শব্দটিও গ্রিক δίαμετρον (diametron, ব্যাসরেখা) সংস্কৃত जामित्र-এর মাধ্যমে।

Saturday, November 03, 2007

জিলা না জেলা?

বাংলার জেলা আরবির জ়িলা থেকে ব্যুৎপন্ন। আরবিতে বানান (ضلع, জ়িলা', ẓilaʻ), অর্থ, পাঁজর, এবং সে থেকে দিক। উর্দুতেও ضلع। হিন্দিতে जिला বা ज़िला। জন টমসন প্ল্যাট‌্স-এর উর্দু, ধ্রুপদী হিন্দি এবং ইংরেজি অভিধানে রোমক হরফে ẓilaʻ বা zila‘, অর্থ দিক, অংশ, (প্রদেশের) বিভাগ, জেলা, (বইয়ের পাতায় ছাপার) কলাম। Concise Oxford Dictionary আর Chamber's-এ zillah। হবসন-জবসনে zilla, তবে খুব বেশি একটা চোখে পড়ে না। বছর পঁচিশেক আগে জিলা কথাটা বেশ প্রচলিত ছিল, এখনও আছে গুটি কয়েক জায়গায়, যেমন জিলা স্কুলের নামে, কয়েক জায়গায় জিলা পরিষদ ভবনেও তাই লেখা থাকত। এখন প্রায় সব জায়গায় জেলা হয়ে গেছে। অনেক ক্ষেত্রে ইশকুলগুলিকেও জেলা স্কুল বলা হয়।

বাংলায় সাধারণত আরবি শব্দ ফারসি এবং উর্দুর মাধ্যমে ই পরিবর্তিত হয়ে এ হিসেবে দেখা দেয়, যেমন, নিজ়ারত থেকে নেজ়ারত। তবে উর্দু অভিধান ফ'রহঙ্গ-ই-রব্বানী-তে উচ্চারণ দেওয়া আছে জিলা। তারপরও উচ্চারণজনিত আলস্যের কারণে উঁচু স্বর ই একটু নেমে গিয়ে মধ্য এ-য় ঠেকেছে। বাংলা উচ্চারণের এটিই কি ধর্ম? ইংরেজিতে শব্দটির উচ্চারণে তেমন পরিবর্তন না হলেও, বাংলাদেশে অন্তত বানানটির একটি ক্ষেত্রে পরিবর্তন হয়েছে গেল দশ বছরে। আগে লেখা হত upazilla, এখনও লেখা হয়; তবে অনেক ক্ষেত্রে তা পাল্টে upazila হয়ে গেছে।

Friday, November 02, 2007

পৃথগ্‌বাসে বৈচারিক হাকিম

ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলো বিচার ব্যবস্থার উপর প্রতিবেদনে পৃথকীকরণ বা বিযুক্তিকরণ অর্থে পৃথক্‌করণের ব্যবহার করেছে। দুটি শব্দই জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাসের অভিধানে আছে, যদিও সুভাষ ভট্টাচার্যের বাংলা প্রয়োগ অভিধান মতে পৃথক্‌করণ লেখাই ভাল। অন্যদিকে দুই ধরণের হাকিমের কথা বলতে গিয়ে পত্রিকাটি লিখেছে বিচারিক (judicial) এবং নির্বাহী (executive) হাকিম। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান এবং আনিসুজ্জামান সঙ্কলিত এবং সম্পাদিত আইন-কোষের মতে শব্দটি বৈচারিক। তাই হওয়াটা স্বাভাবিক; কারণ ইক প্রত্যয়ে স্বরের বৃদ্ধি হয়: বিচার + ইক = বৈচারিক। অনেকেই ঝামেলা এড়াতে বিচারবিভাগীয় কথাটি ব্যবহার করেছে। বৈচারিক (वैचारिक) শব্দটি হিন্দি এবং মরাঠিতেও প্রচলিত, সংস্কৃতের নিয়ম মেনেই, বোধ করি। পৃথক্‌করণের সাথে আইন-কোষে প্রতিশব্দ দেওয়া আছে পৃথগ্‌বাস।