বাংলা ব্যাকরণে পড়ানো হয় শ-এর (শ-উচ্চারণের) সাথে ত, থ, ন, র এবং ল যুক্ত হলে তার উচ্চারণ সংস্কৃত স-এর (যা কিনা ইংরেজি -এর) মত হবে। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, চালর্স ফারগুসন এবং আরও অনেকের অন্তত তাই মত। বেশিরভাগ বাংলা শব্দের ক্ষেত্রে তাই দেখা যায়। আর একারণেই বাংলায় সংস্কৃত স-এর উচ্চারণকে আলাদা ধ্বনিমূল হিসেবে না ধরে শ-উচ্চারণ ধ্বনিমূলের প্রকারভেদ হিসেবে ধরা হয়, যা কিনা তার পারিপার্শ্বিকতার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। যদিও একালের কয়েকজনের মতে সংস্কৃত স-উচ্চারণকে আলাদা ধ্বনিমূল হিসেবে ধরাই ভাল (বোধ করি তাই ভাল, বাংলায় বিদেশি ধ্বনিমূল হিসেবে হলেও)। অর্থাৎ বাংলা শব্দে স-উচ্চারণ এবং শ-উচ্চারণ একই, শ-এর মত, কেবল পরে ত, থ, ন, র এবং ল থাকলে তার উচ্চারণ স-এর মত হবে। যেমন, সকল, সকাল, শালিক, শীষ, আসল, আসর, বিশাল, কুশল, মাস, রাস, রাশ, কুশ, ইত্যাদি।
যুক্ত বর্ণের ক্ষেত্রে পাশাপাশি ধ্বনি থাকলেও তাই, যেমন, অস্ত, স্থিত, স্নান, শ্রী, শ্লীল (যদিও অনেকেই এখন এর নঞ্র্থক শব্দটিকে অ-শ্-লিল্ উচ্চারণ করে, যা তাদের মতে শ্লীল শোনালেও অনেকের মতে খানিকটা অশ্লীল)। নাস্তা (বিকল্প বানানে নাশতা) অনেক আগে রাস্তার মত করে না-স্-তা উচ্চারিত হলেও, অনেকেই না-শ্-তা উচ্চারণ করে (কার যেন লেখায় পড়েছিলাম এই উচ্চারণ উর্দু প্রভাবিত, বিশেষ করে ভারত ভেঙ্গে পাকিস্তান হবার পরের পূর্ব পাকিস্তানেই এটি বেশি ঘটত এবং এখনও বাংলাদেশে, হয়ত উর্দু অধ্যুষিত কলকাতাতেও, কিছুটা ঘটে)। বেশ পুরনো বাংলা সিনেমায় শোনা যায় প্রো-স্-নো, আবার এখন বেশির ভাগই শোনা যায় প্রো-শ্-নো। বাংলা ভাষার উচ্চারণ-ভিত্তিক নিরীক্ষা কখনই হয়নি, তবে হওয়া উচিত, অন্তত কয়েক দশক পর পর। বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত উচ্চারণ অভিধানে দেওয়া আছে প্রো-স্-নো। ভারতের অভিধানে প্রো-শ্-নো এবং প্রো-স্-নো দু'ই।
No comments:
Post a Comment