Tuesday, June 26, 2007

সব হরফের বাক্য

খানিকটা আড়ষ্ট বাক্যকে (গেল পোস্টিং দ্রষ্টব্য) সোজা করে অনুজ বন্ধু লিখে পাঠাল --- 'আকবর ঊষাকালে বৃহত্‍ ঐরাবতে দিল্লীর অর্ধেক প্রদক্ষিণ করতঃ হঠাত্‍ স্বগোতক্তি করিলেন এই ঢোল‌ পাখোয়াজ সঙ্গীত আর সৌরভ মন্দ্রিত আড়ম্বরপূর্ন রঙিন জীবনের ছত্রতলে যে বিষণ্ণ দারিদ্র তাহা কি মোগল সাম্রাজ্যের ঈষত্‍ ঔদাসীন্য, প্রচলিত বৈদেশিক নীতি নাকি বারভুঁইঞার সহিত পুরাণো এবং আত্মঘাতী যুদ্ধের ফসল?' সাধু রীতির বাংলা, সব হরফ নেই। পরের দিন খানিকটা পরিবর্তন --- 'আকবর ঊষাকালে বৃহত্‍ ঐরাবতে দিল্লীর অর্ধেক প্রদক্ষিণ করতঃ হঠাত্‍ স্বগোতক্তি করিলেন এই ঢোল‌ পাখোয়াজ সঙ্গীত আর সৌরভ মন্দ্রিত আড়ম্বরপূর্ন রঙিন জীবনের ছত্রতলে যে বিষণ্ণ দারিদ্র তাহা কি মোগল সাম্রাজ্যের ঈষত্‍ ঔদাসীন্য, প্রচলিত বৈদেশিক নীতি নাকি বারভুঁইঞার সহিত পুরাণো এবং আত্মঘাতী যুদ্ধের ফসল?'

চলতি বাংলায় লিখতে গিয়ে খানিকটা আড়ষ্টতা আর এড়ানোই যায় না। --- 'আষাঢ়ের এক সকালে ঈষান কোণে মেঘের আড়ম্বর এবং সবুজে ঋদ্ধ এই বনভূমির নির্জনতা চিরে ঐরাবতের ডাকে মনে হল ঔদাসীন্যে ঝরে পড়া মাটির উপর শুকনো পাতার ফাঁকে জমে থাকা ঢের পুরনো যত গভীর দুঃখ হঠাৎ বৃষ্টিতে ধুয়ে মুছে অন্ধকার, ঊষর ও নঞর্থক জীবনে রঙধনু এনে দেবে।' সব হরফই আছে। হয়ত আর কয়েকবার এদিক ওদিক করলে একটু ভাল হতে পারে। খুব একটা না। কারণ বাংলায় শুদ্ধ ঞ দিয়ে গুটি কতক শব্দ আছে --- ভুইঞা বা ভুঞা, মিঞা, ডেঞে আর নঞর্থক। বাকি আরও শ' খানেক শব্দ পাওয়া যাবে যার ব্যবহার প্রচলিত বর্তমান বাংলায় নেই। সেগুলো মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের সম্পদ।

2 comments:

Anonymous said...

শব্দগুলো এদিকসেদিক করে আরেকটা বাক্য (নাকি অনুচ্ছেদ?) বানিয়েছি:

ঊনিশে জুলাই, বর্ষামুখর দিন শেষে যখন আষাঢ়ে গল্প শোনাতে বসে ওসমান ভুঁইঞা, ঈষান কোণে তখন অন্ধকার মেঘের আড়ম্বর, সবুজে ঋদ্ধ বনভূমির নির্জনতা চিরে থেকে থেকে ঐরাবতের ডাক, শুকনো পাতারা মাটির উপর ঝরে পড়ে ঔদাসীন্যে, এবং তারই ফাঁকে জমে থাকা ঢের পুরোনো গভীর দুঃখ হঠাৎ যেন বৃষ্টিতে ধুয়ে মুছে ঊষর জীবনে রঙধনু এনে দেয়।

যখন-তখনের ব্যবহার আর কমার আধিক্যে বাক্যটি দীর্ঘ হয়েছে। আবার চেষ্টা করে দেখবো।

Anonymous said...

ভুল হয়েছে। লিখেছি ঊনিশ, হবে উনিশ। বাদ দেয়া যেতে পারে 'উনিশে জুলাই'।

ঊষর শব্দটা পছন্দ হচ্ছিল না। ঊর্ধ্বশ্বাস, ঊর্বর, ঊর্ণনাভ (মাকড়শা) বসানো যায় কিনা, দেখতে হবে।