বাংলায় দু'ধরণের ক্রমবাচকশব্দের প্রচলন। তৎসম ও তদ্ভব। তৎসম বা সংস্কৃত থেকে নেওয়া ক্রমবাচক শব্দের ব্যবহার সব ক্ষেত্রে করা গেলেও, গুনতে থাকলে খানিক পরেই অন্তত চলতি ভাষায় বড় বেমানান ঠেকে। সাধু রীতিতে খানিকটা বিপত্তি বিদ্যমান। সংস্কৃতের লিঙ্গের জের ধরে প্রথম বালক এবং প্রথমা বালিকা লেখা কতখানি গ্রহণযোগ্য হবে তা প্রায়ই ঠিক বোঝা যায় না। আবার তদ্ভব বা প্রাকৃত বা অপভ্রংশ হয়ে বাংলায় আসা ক্রমবাচক শব্দ মাসের তারিখের চেয়ে খুব বেশি নেই। কারণ মাসের তারিখ বোঝানোর কাজেই তা ব্যবহৃত হয়। যেমন, পয়লা মার্চ, পনেরই মে, বা ত্রিশে ডিসেম্বর, এমনকি বত্রিশে বৈশাখ (বাংলাদেশে যেমনটি আগে ছিল, আদি বাংলা মাস ব্যবহার করে এমন জায়গায় এখনও আছে)। তৎসম ক্রমবাচক শব্দের ব্যবহার করে 'প্রথম পরীক্ষা' এবং তদ্ভব শব্দের ব্যবহার করে বাইশে জুলাই বেশ বলা যায়। তবে কোন বইয়ের বিশেষ পাতাকে
একশ' পচিশে, তদ্ভব নিয়মে, বা পঞ্চবিংশত্যাধিকতম, তৎসম নিয়মে, বলা কোনভাবেই যায় না। ইংরেজিত এই বিশেষপাতাটির নাম page 225। দশক গণনার সময় বলা হয় একের বা ছয়ের দশক। শব্দ সঙ্ঘটনও খুবই সহজ। বাংলা সঙ্খ্যা, শেষে বাংলা সম্বন্ধপদ বিভক্তি, -এর। আমরা অনেকেই বলি একশ' পচিশ নম্বর পাতা। তা না বলে একশ' পচিশের পাতা বললেই ভাল শোনায়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে যা গোনা হচ্ছে সে শব্দের আগে সঙ্খ্যা এবং পরে -এর বসালে শ্রুতিকটু হয় না, যেমন, পাঁচদিনের দিন।
No comments:
Post a Comment