পরশুরামের দরকার পড়েছিল তারিণী কবিরাজের ভাষায় পূর্ববঙ্গীয় আমেজের; আর তাই ‘Zান্তি পারো না।’ হাসির গল্প বলে রোমক হরফের মিশেল দেওয়া। কিন্তু অভিধান বা গবেষণাধর্মী কাজে একটি বিশেষ নিয়মে ব্যবহার দেখা যায়। জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাসের বাঙ্গালা ভাষার অভিধানে, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বানানের নিয়মে, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কাজে এবং আরও অনেক জায়গায় পরিবর্ধিত হরফের ব্যবহার দেখা যায়। বিংশ শতকের শুরুর প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর পর কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক করে যে জ-এর নিচে ফুটকি জ় দিয়ে ইংরেজির জ়েড (z) বা আরবির জ়াল (ذ ,ز ,ض ,ظ) এবং সমধ্বনি বোঝানো হবে; বিকল্পে জ-এর পাশে নিচের দিকে ফুটকি, জ.। সুনীতিকুমার এবং জ্ঞানেন্দ্রমোহনেরও একই মত। তবে সুনীতিকুমারের পছন্দ পাশে ফুটকি, কারণ এতে করে নতুন হরফ বানাতে হত না; আর জ্ঞানেন্দ্রমোহনে পছন্দ নিচে ফুটকি।
বুদ্ধদেব বসু পরে জ-এর নিচে দুই ফুটকি দিয়ে, জ̤, এর ব্যবহার শুরু করে ফরাসি je (জ্য̤, আমি) বা রুশ жизнь (জি̤জ়ন্, জীবন) এর প্রথম ব্যঞ্জনধ্বনি বোঝাতে। যদিও এই ক্ষেত্রে জ্ঞানেন্দ্রমোহন এবং সুনীতিকুমারের বিধান ঝ় বা ঝ.। কিন্তু এরও বেশ আগে, আগের শতকের মাঝামাঝিতে, ১৮৫১ সালে কলকাতায় ছাপানো জন মেন্ডিসের কম্প্যানিঅন টু জনসন্'স ডিকশনারি: বেঙ্গলি অ্যান্ড ইংলিশ-এ এই হরফ পরিবর্ধনের একটি উদাহরণ দেখতে পাওয়া যায়। মেন্ডিসের অভিধানের একটি উল্লেখ করার মত বিষয় হল আরবি-ফারসি থেকে আসা শব্দে জ এবং জ় ধ্বনির বানানে পার্থক্য নির্দেশ, জ̤-এর নিচে দুই ফুটকি দিয়ে। ছবিতে উপরে আজি এবং আজিকার শব্দ দুটি বাংলার নিজের, আর নিচের আজি̤জ̤ এবং আজি̤ম শব্দ দুটি আরবি-ফারসির, জ-এর নিচে দুটি করে ফুটকি।
1 comment:
ভালো, ভালো, খুব ভালো লাগল। বাংলা ভাষা সম্পর্কিত অনেককিছু জানলাম। আপনার পাণ্ডিত্র স্বীকার করতে লজ্জা নেই। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ।
Post a Comment