রাজশেখর, জ্ঞানেন্দ্রমোহন, হরিচরণ, যোগেশচন্দ্র, বা কাজী আব্দুল ওদুদ কোথাওই সোচ্চার শব্দটি নেই। বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে প্রকাশিত উচ্চারণ অভিধানগুলোতে অবশ্য শব্দটি বিদ্যমান, (অত্যন্ত) মুখর বা সরব অর্থে। বাংলা একাডেমির বাংলা-ইংরেজি অভিধানেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়। পাওয়া যায় বাংলা একাডেমি ব্যবহারিক বাংলা অভিধানে। শৈলেন্দ্র বিশ্বাসের সংসদ বাংলা অভিধানেও পাওয়া যায়: ‘সোচ্চার বিণ. ১। প্রবলভাবে উচ্চারিত বা উচ্চরবে ব্যক্ত (বেতনবৃদ্ধির দাবি সর্বত্র সোচ্চার); ২। অত্যন্ত মুখর (শ্রমিকগণ এ বিষয়ে সোচ্চার)। [বাং. স < সং. সহ + উচ্চার (=উচ্চারণ, কথন)]। (তু. অনুচ্চার)।’ বাংলা একাডেমি অভিধানে: ‘সোচ্চার - বিণ. তীব্র বা প্রবলভাবে উচ্চারিত হয় এমন; অত্যন্ত মুখর; তর্জন-গর্জন; চিৎকার; হৈ চৈ। [স. স + উৎ + চারি, বহু]।’ শব্দটি বাংলা; সংস্কৃতে, অন্তত মনিয়ের মনিয়ের-উইলিয়াম্স্-এ নেই, যদিও অনুচ্চার, উচ্চারণ না করা অর্থে, আছে। একটি ব্লগ থেকে জানা গেল প্রমথনাথ বিশীর হাতে নাকি চার দশক আগে বাংলায় শব্দের ভুল ব্যবহারের বিরোধিতা হয়েছিল। সোচ্চার তেমনই একটি শব্দ। কারণ জ্ঞানেন্দ্রমোহন-এ উচ্চার অর্থ মল এবং মলত্যাগ। স + উচ্চার অর্থ প্রতিবাদী না হয়ে উচ্চার (মলত্যাগ) অভিলাষীকেও বোঝাতে পারে। হরিচরণে উচ্চারের একমাত্র অর্থ উচ্চারণ। মনিয়ের মনিয়ের-উইলিয়াম্স্-এর সংস্কৃত-ইংরেজি অভিধান মতে মল, মলত্যাগ এবং উচ্চারণ। ক্রমটি লক্ষ্যণীয়। তারপরেও ইংরজি clamorous অর্থে সোচ্চার যতটা ভাল খেলে, মুখর তার চেয়ে কম, সরব আরও কম। বাংলার সম্পদ হিসেবেই অভিধানে শব্দটির থাকা উচিত ছিল।
No comments:
Post a Comment