কেউ খাবার কিনে খেতে পারে এমন জায়গাবিশেষের নাম রেস্তোরাঁ। রেস্তরাঁও লেখা হয়। শব্দটি বহুল প্রচলিত এবং বহুল ব্যবহৃত যদিও বেশিরভাগ বাংলা অভিধানে শব্দটির দেখা মেলে না। আর রাস্তার পাশে রেস্তোরাঁর নামে চন্দ্রবিন্দুটিও প্রায়ই অনুপস্থিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যা মধুর ক্যান্টিন নামে পরিচিত সেখানে লেখা — মধুর রেস্তোরা; চন্দ্রবিন্দু নেই।
শব্দটি রাজশেখর বসু, জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস, হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বা যোগেশচন্দ্র রায়ে নেই, নেই কাজী আব্দুল ওদুদেও। বাংলাদেশে প্রকাশিত কোনও বানান বা উচ্চারণ অভিধানেও নেই। এর দেখা মেলে কেবল বাংলা একাডেমির ব্যবহারিক অভিধান এবং সাহিত্য সংসদের বাংলা অভিধানে। বাংলা একাডেমির অভিধানে ক্রমটি রেস্তোরাঁ, রেস্তরাঁ; ব্যুৎপত্তি ফারসি (ছাপার ভুল হয়ে থাকতে পারে); আর সংসদ অভিধানে রেস্তরাঁ, রেস্তোরাঁ; ব্যুৎপত্তি ইংরেজি হয়ে, ফরাসি থেকে। এর আরও দেখা মেলে পশ্চিম বঙ্গ আকাদেমির বানান অভিধানে, রেস্তোরাঁ; সাহিত্য সংসদের বানান অভিধানে, রেস্তরাঁ; এবং সাহিত্য সংসদের উচ্চারণ অভিধানে, রেস্তরাঁ।
তবে জন মেন্ডিস, জে সাইক্স, উইলিয়াম কেরি, হেনরি পিট্স ফর্স্টার বা পি, এস, ডি'রোজারিওর পুরনো দিনের কোনও বাংলা অভিধানে শব্দটি পাওয়া যায় না। শব্দটি বাংলায় প্রবেশ ফরাসি থেকে, ইংরেজির হাত ধরে হলে হতেও পারে। ইংরেজিতে শব্দটি এসেছে ফরাসি ক্রিয়া restaurer এর বর্তমান ক্রিয়াবাচক বিশেষণ restaurant থেকে, অর্থ সেই খাদ্য যা সতেজ করে। এই ফরাসি ক্রিয়ার আগমন পুরনো ফরাসি restorer থেকে, আর তার আগমন লাতিন restaurare (re- + -staurare) থেকে, অর্থ আবার তৈরি করা। আর ফরাসিতে কেনার পর বসে খাবার জায়গা অর্থে প্রথম ব্যবহার ১৭৬৫ সালে, আর ইংরেজিতে ১৮২৭ সালে।
গুগলে শব্দটির সাতটি বানান পাওয়া গেছে — রেস্তোরা, রেস্তোরাঁ, রেস্তোঁরা, রেঁস্তোরা, রেস্তরাঁ, রেস্তঁরা, রেঁস্তরা; এর বাইরে আর একটি বানানই কেবল সম্ভব — রেস্তরা; একটু খুঁজলে হয়তও তারও দেখা পাওয়া যাবে। ব্যবহার দেখে মনে হয় একসময় রেস্তোরাঁর চন্দ্রবিন্দুটি লুপ্ত হবে, বিশেষত পূর্ব বঙ্গে।
1 comment:
পশ্চিম বাংলায় রেস্টুরেন্ট /রেস্টুরাণ্ট /রেঁস্তোরা বানান ও দেখেছি। । যদিও রেস্তোরাঁ ই মনে হয় সঠিক হবে।
Post a Comment