Friday, September 21, 2007

বাংলার হরফ, সংস্কৃতের বর্ণমালা

বাংলার হরফ নিজস্ব, তবে বর্ণমালা নিজের নয়। সংস্কৃত বর্ণক্রম বাংলার উপর চাপিয়ে দেওয়া, বা নেওয়া। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পর থেকে দুয়েকটি হরফের অবস্থান বদল।, মান্য বর্ণমালায় দু-একটি হরফের লুপ্তি। বাংলার এই হরফ তার নিজস্ব হলেও গোটা চারেক ভাষা লেখার কাজে তা ব্যবহৃত হয় বা হত। বাংলা হরফে লেখা হয়, বাংলা এবং এর উপভাষা ছাড়াও, অহমিয়া, সংস্কৃত, সাঁওতালি আর মণিপুরি। সংস্কৃতের প্রধান লিপি এখন দেবনাগরীকে ধরা হয়, বিশেষত ইংরেজদের আগমনের পর থেকে। সংস্কৃতর রোমক হরফেও লেখা হয় আর লেখা হয় ভারতীয় বেশ কয়েকটি লিপিতে, তামিল-গোত্রীয় গ্রন্থ লিপি সহ। সাঁওতালি বাংলা ছাড়াও লেখা হয় ইংরেজি, দেবনাগরী এবং ওড়িয়া হরফে। ওল চিকি বলে একটি হরফেও। মণিপুরির এক অংশ যার নাম মৈতৈ তা লেখা হয় মৈতৈ নামের এক হরফে আর বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরির হরফ বাংলা। এছাড়াও বাংলা দেশের বেশ কিছু উপজাতির ভাষা যেমন খাসিয়া, আচিক, ককবরক ইত্যাদি বাংলা হরফে লেখা হয়।

বাংলা হরফে লেখা অহমিয়া, সংস্কৃত, সাঁওতালি এবং মণিপুরির উদাহরণ --- 'কিয়নো ঈশ্বরে জগতলৈ এনে প্রেম করিলে, যে, তেওঁর পুত্রত যি কোনোৱে বিশ্বাস করে, সি নষ্ট নহৈ, অনন্ত জীৱন পাবর নিমিত্তে, তেওঁর সেই একজাত পুত্রকেই দান করিলে।' (অহমিয়া)।। 'তদ্বদহং যুষ্মান্‌ ব্যাহরামি, একেন পাপিনা মনসি পরিবর্ত্তিতে, ঈশ্বরস্য দুতানাং মধ্যেহ প্যানন্দো জায়তে।' (সংস্কৃত)।। 'এন্তে ঈশ্বর দ ধারতিরেন কো নুনাঃ এ দুলাড়কেৎ কোআ, আইঃরেন একুপুত হপনে এমকোদেতায়া, যেমন উনিরে সানাম পাতিয়াউঃকো আলোকো নষ্ঠোঃ। বিচকোম জায়জুগ জিওন কো ঞাম।' (সাঁতালি, সাঁতাল পরগণা)।। এবং 'করিননো হাইববু ঈশ্বরনা তাইবংপাম্বা অসিবু অসুপ নুংশিব্বি‍া অসিনি, ইবুংঙো মহাক্বী অনিশুদবা মচা নিপা অদুবু পিবি, মচা অদুবু খাজবা মী পুম্‌নমক্‌ অদুবুদি মাংহনদনা লোম্বা নাইদবা খবাই ফন্দনি।' (মণিপুরি)।।

আসামের উত্তর প্রচলিত রংদানিয়া বা রভা ভাষায় বাংলা হরফের উদাহরণ --- 'আতানা যে কাই ঈশ্বরনি খুসি ছাংয়ে ফুসিয়া, উ আংই ফজাংবারা, আরও আংই মমব্রাতাং, জিব্রা ফজমবারতাং আরও ওনিবারা আরও জিব্রা।' অহমিয়া, সাঁওতালি এবং মণিপুরি বাক্যের বাংলা পাঠ --- 'কারণ ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার একজাতা পুত্রকে দান করিলেন, যেন, যে কেহ তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে বিনষ্ট না হয়, কিন্তু অনন্ত জীবন পায়।' বাইবেলের পাঠ, হিস্পানি ভাষায় 'বর্তমান ও অতীতের বর্ণমালা' ওয়েব সাইট থেকে নেওয়া।

No comments: